Header Ads Widget

Responsive Advertisement

ফজরের নামাজের সুন্নাতের বিধান

 ফজরের সুন্নতের বিধান? 

 

প্রশ্ন: অনেক সময় ফজরের নামাজের সময় মসজিদে গিয়ে দেখা যায়, জামাত শুরু হয়ে গেছে কিংবা নামাজের ইকামত চলছে। এমন অবস্থায় দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যাই, সুন্নত পড়ব কিনা। এ ক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কী? 



উত্তর: এমতাবস্থায় দেখতে হবে, সুন্নত পড়ে ইমাম সাহেবকে কমপক্ষে দ্বিতীয় রাকাতে পাওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা? সম্ভাবনা থাকলে সুন্নত পড়ে জামাতে শরিক হবেন।

(১) হযরত ইবনে মাসউদ রা: এর হাদীস 

এ প্রসঙ্গে আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.), হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) ও আবু দারদা (রা.)-এর মতো বিশিষ্ট সাহাবিদের থেকে বর্ণিত আছে যে, তারা ফজরের জামাত শুরু হয়ে গেলেও সুন্নত পড়ে নিতেন।

(২) হযরত আবু দারদার রা: এর হাদীস 

আবু দারদা (রা.) ফজরের সময় মসজিদে প্রবেশ করে লোকজনকে ফজরের জামাতে কাতারবদ্ধ পেলে মসজিদের এক কোণে (ফজরের) সুন্নত পড়তেন। অতপর মানুষের সঙ্গে জামাতে শরিক হতেন। (শরহু মায়ানিল আসার)

আর যদি সুন্নত পড়ে ইমাম সাহেবকে দ্বিতীয় রাকাতে পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকে, তাহলে সুন্নত পড়া ছাড়াই জামাতে অংশগ্রহণ করবে। এ ক্ষেত্রে তা পরে পড়ে নিতে হবে। কারণ, সুন্নত নামাজগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ফজরের দুই রাকাত সুন্নত।

(৩) হযরত আবু হুরায়রা রা: এর হাদীস 

হাদিস শরিফে এর অনেক ফজিলত সম্পর্কে বিভিন্ন বর্ণনা এসেছে। এছাড়াও এর প্রতি যেমন তাগিদ দেওয়া হয়েছে, তা অন্য সুন্নত নামাজের ক্ষেত্রে ততটুকু দেওয়া হয়নি। এ প্রসঙ্গে আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন,

‘তোমরা ফজরের সুন্নত ছেড়ে দেবে না। যদিও শত্রুবাহিনী তোমাদেরকে তাড়া দেয়।’ (আবু দাউদ, হাদিস নং: ১২৫৮)

(৪) হযরত আয়েশা রা: এর হাদীস 

আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল (সা.) বলেন,

ফজরের দুই রাকাত (সুন্নত) দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে তার চেয়ে উত্তম। (মুসলিম, হাদিস নং: ৭২৫)

আরেক হাদিসে আছে, নবী (সা.) ফজরের দুই রাকাত (সুন্নত) নামাজে এত গুরুত্ব দিতেন যে, অন্য কোনো নফল (বা সুন্নত) নামাজে ততটুকু দিতেন না। (বুখারি, হাদিস নং: ১১৬৩; মুসলিম, হাদিস নং: ৭২৪)

সুতরাং ফজরের জামাত শুরু হয়ে গেলেও সুন্নত পড়ে যদি জামাতের সঙ্গে অন্তত দ্বিতীয় রাকাতও পাওয়া যায়, তাহলে সুন্নত নামাজ পড়ে নিতে হবে। আর দ্বিতীয় রাকাত পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকলে সুন্নত পড়বে না; বরং জামাতে শরিক হয়ে যাবে এবং সূর্যোদয়ের পর সুন্নত পড়ে নেবে।

(৫) হযরত আবু হুরায়রা রা: এর আরো একটি হাদীস 

কেননা আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন,

‘যে ফজরের দুই রাকাত (সুন্নত) পড়তে পারে না, সে যেন তা সূর্যোদয়ের পর পড়ে নেয়।’ (তিরমিজি, হাদিস নং: ৪২৩)

উল্লেখ্য, কোনো কোনো ফকিহ অবশ্য সুন্নত পড়ার পর ইমামকে তাশাহুদে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও সুন্নত পড়ে নেওয়ার কথা বলেছেন। তবে দ্বিতীয় রাকাত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে ফজরের সুন্নত পড়তে হবে, এটিই অধিকাংশ ফকিহ’র মত।





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ