Header Ads Widget

Responsive Advertisement

রোজার ফেদয়া

 

ফিদইয়া

মাসআলা : যে বৃদ্ধ বা অসুস্থ ব্যক্তির রোযা রাখার সামর্থ্য নেই এবং পরবর্তীতে কাযা করতে পারবে এমন সম্ভাবনাও নেইএমন ব্যক্তি রোযার পরিবর্তে ফিদইয়া প্রদান করবে। সূরা বাকারা (০২) : ১৮৪

ছাবেত আলবুনানী রাহ. বলেনআনাস ইবনে মালেক রা. যখন বার্ধক্যের কারণে রোযা রাখতে সক্ষম ছিলেন না তখন তিনি রোযা না রেখে (ফিদইয়া) খাবার দিতেন। মুসান্নাফে আবদুর রাযযযাকহাদীস ৭৫৭০

ইকরিমা রাহ. বলেনআমার মা প্রচণ্ড তৃষ্ণা-রোগে আক্রান্ত ছিলেন এবং রোযা রাখতে সক্ষম ছিলেন না। তাঁর সম্পর্কে আমি তাউস রাহ.কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেনপ্রতিদিনের পরিবর্তে মিসকীনকে এক মুদ (বর্তমান হিসাবে পৌনে দুই কেজি) পরিমাণ গম দান করবে। মুসান্নাফে আবদুর রাযযাকহাদীস ৭৫৮১

মাসআলা : এক রোযার পরিবর্তে এক ফিদইয়া ফরয হয়। এক ফিদইয়া হলকোনো মিসকীনকে  দুই বেলা পেট ভরে খাবার খাওয়ানো অথবা এর মূল্য প্রদান করা।

হযরত সায়ীদ ইবনে মুসায়্যিব রাহ. বলেন

وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ.

(আর যাদের রোযা রাখা অত্যন্ত কষ্টকর তারা ফিদইয়াএকজন মিসকীনকে খাবার প্রদান করবে।)

এই আয়াত রোযা রাখতে অক্ষম বৃদ্ধের জন্য প্রযোজ্য। মুসান্নাফে আবদুর রাযযাকহাদীস ৭৫৮৫আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৬৯আদ্দুররুল মুখতার ২/৪২৬

মাসআলা : যাদের জন্য রোযার পরিবর্তে ফিদইয়া দেওয়ার অনুমতি রয়েছে তারা রমযানের শুরুতেই পুরো মাসের ফিদইয়া দিয়ে দিতে পারবে। আদ্দুররুল মুখতার ২/৪২৭আলবাহরুর রায়েক ২/২৮৭

মাসআলা : উপরোক্ত দুই শ্রেণীর মানুষ ছাড়া (অর্থাৎ দুর্বল বৃদ্ধ ও এমন অসুস্থ ব্যক্তিযার ভবিষ্যতে রোযার শক্তি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।) আরো যাদের জন্যে রোযা ভাঙা জায়েয আছে, (যেমনমুসাফিরগর্ভবতী ও শিশুকে স্তন্যদানকারিণী) তারা রোযা না রাখলে রোযার ফিদইয়া দেবে নাবরং পরে কাযা করবে। আর ওযরের হালতে মৃত্যুবরণ করলে কাযা ও ফিদইয়া কিছুই ওয়াজিব হবে না। অবশ্য ওযরের হালত শেষ হওয়ার পরঅর্থাৎ মুসাফির মুকীম হওয়ার পরগর্ভবতী নারীর সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া ও স্রাব বন্ধ হওয়ার পর এবং স্তন্যদানকারিণী স্তন্যদান বন্ধ করার পর যদি মৃত্যুবরণ করে তাহলে ওযর শেষে যে কয়দিন সময় পেয়েছে সে কয়দিনের কাযা যিম্মায় আসবে। কাযা না করলে উক্ত দিনগুলোর ফিদইয়া প্রদানের ওসিয়ত করে যেতে হবে। আদ্দুররুল মুখতার ২/৪২৩৪২৪কিতাবুল হুজ্জাহ আলা আহলিল মাদীনাহ ১/২৫৫

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেনগর্ভবতী নারী ও শিশুকে স্তন্যদানকারিণীর জন্যে রমযানে রোযা না রাখার অবকাশ রয়েছে। তারা ফিদইয়া আদায় করবে নাবরং রোযাগুলো কাযা করে নেবে। মুসান্নাফে আবদুর রাযযাকহাদীস ৭০৬৪

মাসআলা : ছুটে যাওয়া রোযার কাযা সম্ভব না হলে মৃত্যুর পূর্বে ফিদইয়া দেওয়ার ওসিয়ত করে যাওয়া জরুরি। ওসিয়ত না করে গেলে ওয়ারিশরা মৃতের পক্ষ থেকে ফিদইয়া দিয়ে দিলে আশা করা যায়আল্লাহ তাআলা কবুল করবেন। তবে মৃতব্যক্তি ওসিয়ত না করে গেলে সেক্ষেত্রে মিরাসের ইজমালী সম্পদ থেকে ফিদইয়া দেওয়া হবে না। একান্ত দিতে চাইলে বালেগ ওয়ারিশগণ তাদের অংশ থেকে দিতে পারবে। রদ্দুল মুহতার ২/৪২৪-৪২৫ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৭

মাসআলা : এক রোযার ফিদইয়া একজন মিসকীনকে দেওয়া উত্তম। তবে একাধিক ব্যক্তিকে দিলেও ফিদইয়া আদায় হয়ে যাবে। একাধিক ফিদইয়া এক মিসকীনকে দেওয়া জায়েয।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেনযে বৃদ্ধ রোযা রাখতে সক্ষম নন তিনি রোযা না রেখে প্রতি দিনের পরিবর্তে একজন মিসকীনকে আধা সা (অর্থাৎ প্রায় পৌনে দুই কেজি) গম দিয়ে দেবেন। মুসান্নাফে আবদুর রাযযাকহাদীস ৭৫৭৪আলবাহরুর রায়েক ২/৮৭আদ্দুররুল মুখতার ২/৪২৭

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ